পানিপ্রবাহ একেবারেই কমে গেছে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলাসহ বেশিরভাগ নদ-নদীর। ফলে নদীর বুকজুড়ে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য বালুচর।
সরেজমিন দেখা গেছে, দেড় থেকে দুই কিলোমিটার প্রস্থ ও ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ধরলা নদীর বুক এখন ধু-ধু বালু চর। দেখে বোঝার উপায় নেই, একসময়ের প্রমত্তা ধরলা নদী এটি।
এই নদী এসব বালুচরের পাশে পরিণত হয়েছে সরু খালে। সেখানে সামান্য পানি থাকলেও তাতে নেই কোনো প্রবাহ। একই অবস্থা অন্যান্য নদীরও।
কয়েক বছর আগেও শুকনো মৌসুমে নদীতে পানিপ্রবাহ ছিল; কিন্তু বর্তমানে নাব্য সংকটে থেমে গেছে সে প্রবাহ। বছরের এই সময়টাতে নদীতে নৌকা না চলায় ও মাছ না থাকায় কষ্টে দিন পার করছেন এসব পেশার সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
ধরলা পাড়ের বাসিন্দা শাহ আলম মিয়া বলেন, নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় কমে গেছে পানির ধারণ ক্ষমতা। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙছে ঘর-বাড়ি। আর শুকনো মৌসুমে থাকছে না পানি।
কয়েক বছর আগেও ধরলা নদীতে সব সময় পানি থাকত। মাছ ধরে সংসার ভালোই চলছিল। এখন ধরলায় পানিও নাই, মাছও নাই। পড়ছি বিপদে। এখন কোনোরকমে নৌকা চালাই।
শহরের মানুষজন ঘুরতে আসে। তাদের নিয়ে যে ভালোভাবে নৌকা চালাব, তাও পারি না। নৌকা ঠেকে যায় মাটিতে। তাই মানুষ নৌকায় উঠতেও চায় না। তার পরও নৌকা চালিয়ে কোনোরকমে সংসারের হাল ধরে আছি।’ এভাবেই আক্ষেপ করছিলেন জেলে ভানু চন্দ্র।
আমাদের কাজ হচ্ছে খনন করা। তাই নদী সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি ও খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নদীগুলো খনন হলে নদ-নদীগুলো জীবন্ত হয়ে উঠবে।
জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর দ্রুত খনন করা না হলে বর্ষা মৌসুমে যেমন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে, তেমনি নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকাও পড়বে চরম সংকটে। হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য।
Leave a Reply